জীবন নষ্ট হয়ে গিয়েছে? আসুন নতুন করে জীবনটাকে সাজিয়ে তুলি!

জীবন নষ্ট হয়ে গিয়েছে? আসুন নতুন করে জীবনটাকে সাজিয়ে তুলি!

জীবন নষ্ট হয়ে গিয়েছে? আসুন নতুন করে জীবনটাকে সাজিয়ে তুলি!

আপনার কি মনে হয় আপনার জীবন নষ্ট হয়ে গিয়েছে? জীবনটা নতুন করে সাজিয়ে তুলতে চান? জীবনের মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ হতে আসুন নতুন করে জীবন সাজিয়ে তুলি – জীবনের পার্থিব সমস্যাগুলো সমাধানের মাধ্যমে সুখ ও সফলতায় এক স্বার্থক জীবনের শুরু করি…

Self Exploration

আত্ম-অনুসন্ধান : আপনার কি হয়েছে?!

অধিকাংশ মানসিক সমস্যার অনন্য উপসর্গ,কারণ,লক্ষণ এবং হেতু হলো “আপনার কি হয়েছে?” সেটা বুঝতে [আইডিয়েন্টিফাই] করতে না পারা – তথাপি আপনি যদি আপনার সমস্যার মূল [Root] নিশ্চিত হতে পারেন তবে সিংহভাগ ক্ষেত্রে (১) নিজেই নিজের মানসিক সমস্যার সমাধান করতে সমর্থ হবেন (২) আপনার প্রকট মানসিক সমস্যা ক্ষীণ হয়ে যাবে অথবা (৩) কিছু কিছু ক্ষেত্রে মানসিক সমস্যা লুপ্ত হয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই সাইকোলজিক্যালি আপনি সুস্থতা লাভ করতে পারেন!

তদুপরি “আপনার কি হয়েছে?” এটা নিজে নিজে নির্ণয় করা কঠিন হয়ে যায় কেননা মস্তিস্কের মানসিক মিথস্ক্রিয়ায় কনশিয়াস (সচেতন), সাবকনশিয়াস (অবচেতন) ও কিয়ৎ ক্ষেত্রে হয়তো আনকনশিয়াস (অচেতন) মাইন্ডের পরস্পর অস্থিতিশীল অবস্থান [পরিবেশ, পরিস্থিতি ও প্রেক্ষাপট স্বাপেক্ষ]; উদাহরণস্বরূপ “বায়ুর মাঝে বাস করে যেমন অক্সিজেনের অস্তিত্ব অনুভব করা কঠিন তেমনি সমস্যার ভেতর অবস্থান করে সমস্যার কারণ উপলব্ধি কঠিন হবে এটাও অস্বাভাবিক নয় অম্তত”।

আপনার কি হয়েছে? – এটা নির্ণয় করতে আপনি স্থিতিশীল মানসিকতায় নিজেই নিজের প্রশ্ন উত্তর তথা Self Judgment প্রক্রিয়ায় আত্মনিয়োগ করুন এভাবে :-

(১) “আপনার কি হয়েছে?” বলে আপনি পারিপার্শ্বিকতা স্বাপেক্ষে উপলব্ধি করেন?

(২) আপনি যা উপলব্ধি করছেন সেটা যুক্তি ও তর্কের বিচারে কতোটুকু যথার্থ বলে আপনি মনে করেন?

(৩) আপনার সমস্যার কারণ অতীতের সাথে রিলেটেড কি না? যদি রিলেটেড হয় তবে সেটার স্বরূপ কি?

(৪) আপনার সমস্যা’টি বর্তমানে আপনার ন্যাচারাল লাইফে কিরূপে কতোটুক ইফেক্ট সৃষ্টি করছে?

(৫) আপনার এই সমস্যাটি আপনার ভবিষ্যত জীবনে কেমন ইমপ্যাক্ট সৃষ্টি করতে পারে বলে আপনি মনে করেন?

(৬) “আপনার সমস্যা’টি সমাধান হয়ে যাবে” এরূপ চিন্তায় আপনার নিজের উপলব্ধি কিরূপ? যেমন “অমুক হলে হয়তো সব সমাধান হয়ে যাবে” – এই “অমুক” বিষয় [Subject] আসলে কি? একইসাথে সত্যাতিসত্য রূপে উক্ত Subject দ্বারা আদতেই আপনার সমস্যার সমাধান হয়ে যাবার লজিক্যাল সম্ভবনা কতোটুকু?

(৭) আপনার সমস্যার কারণে শারীরিক প্রভাব [Physical Effect] কেমন? নাকি Physical Effect এর কারণেই সমস্যার উদ্ভব?

(৮) আপনার সমস্যা আপনাকে মানসিকভাবে কিরূপ প্রভাবিত করছে [Natural Mentality স্বাপেক্ষ] বলে আপনি মনে করেন?

(৯) আপনি আপনার সমস্যা সমাধানে নিজে নিজের অবস্থা ও অবস্থান হতে কতোটুকু সক্ষম বলে ভাবছেন? অথবা আপনি কি মনে করেন যে আপনার সমস্যা সমাধানে অন্যের কাউন্সিলিং বা সহায়তার প্রয়োজন আছে?

এখন উপরোক্ত প্রশ্ন সমূহের উত্তর [প্রশ্নোত্তর] একটি সাদা কাগজে লিখুন তাহলে আপনার মানসিক অবস্থার একটি খসড়া উপাত্ত [Draft Data] তৈরী হবে – যা মূল্যায়ন করলে আপনার নিজের কি হয়েছে সেটা যথার্থরূপে যাচাই করতে সক্ষম হবেন [এই যাচাই প্রক্রিয়া হয়তো প্রয়োজনে একাধিকবার করতে হতে পারে অথবা যাচাই প্রক্রিয়ায় সিদ্ধান্ত গ্রহণে অন্যের সহায়তার প্রয়োজন হতে পারে] – তদুপরি যে Result আসবে সেটির প্রতি বিশ্বাস এবং উহার সমাধানে আত্মবিশ্বাসী হওয়া আবশ্যিক কর্তব্য বটে!

Mind Control

সুখী ও সফল জীবন লাভে নিজের মাইন্ড কনট্রোল করতে পারার গুরুত্ব অপরিসীম। আসুন Self Mind Control এর Task সমূহে আলোকপাত করি!

(১) কখনো আপনার মনে পারতপক্ষে কোন কুচিন্তা আনা যাবে না; তবুও যখনই কোন বাজে চিন্তা আসবে তখনই মনে মনে আপনার মা অথবা বাবা কিংবা প্রিয়জনের মুখ’টি কল্পনা করবেন।

(২) যখনই কোন খারাপ কাজ করতে ইচ্ছা জাগবে তখনই Revenge of Nature এর কথাটি স্মরণ করুন।

(৩) যখনই আপনার মনে রাগের সঞ্চার হবে তখনই ঠান্ডা পানিতে হাত মুখ এবং বিশেষত ঘাড় ধুয়ে নিন তাহলে মানসিকভাবে প্রশান্তি পাবেন।এছাড়াও Reverse Counting এ উল্টো দিক হতে সংখ্যা গণনা করুন তাহলে রাগ কমতে পারে।

(৪) যখনই আপনার মনে কৃপণতার আভাস পাবেন তখনই খোলা আকাশের দিকে তাকিয়ে বিশাল বিস্তৃত’তা অবলোকন করবেন;আপনার মনের যাবতীয় সংকোচ ও সংকীর্ণতা কেটে যাবে।

(৫) পারতপক্ষে ‘মিথ্যা’ বলবেন না; মিথ্যা বলার আগে বুকের ওপর হাত রেখে হার্টবিট অনুভব করুন। আপনি হয়তো একদিন মরণের পর নিঃশেষ হয়ে যাবেন কিন্তু আপনার মিথ্যা কথাটি আপনার মৃত্যুর পরও আপনাকে কলংকিত করতে বেঁচে রইবে- এমনভাবে চিন্তা করলে দেখবেন মিথ্যা বলার অকারন অভ্যাসটি দূর হয়ে যাবে।

(৬) হিংসা করবে না- যদি একান্তই কারোর ওপর হিংসা জাগে তাহলে মুচকি হেসে মনের নেগেটিভ ইনটেনশনটা দূর করে ফেলবেন।অপরাপর সেই হিংসাটাকে জিদে কনভার্ট করবেন যেন “তার মতো নয় বরং তারচেয়েও Best করে দেখাতে পারেন”!

(৭) মনের ভেতর ক্ষোভ পুষে রাখবেন না কারন ক্ষোভ নামক ছাইচাপা আগুনে ধীরে ধীরে আপনার মনের প্রশান্তি পুড়ে নিঃশেষ হয়ে যাবে, পক্ষান্তরে ক্ষমার মহত্ত্বে এক অপূর্ব সাইকোলজিক্যাল স্যাটিসফেকশন অনুভব করতে পারবেন।

(৮) সবসময় হাসিমুখে থাকার চেষ্টা করুন কারন তা আপনার মন’কে প্রফুল্লতা এনে দিবে।

(৯) একান্তই মন খারাপ হলে কাঁদবেন- কারোর সামনে কাঁদতে লজ্জা হলে নিভৃতে একাকী মন খুলে কাঁদবেন তাতে মন’টা রিফ্রেশ হবে!

(১০) জীবনটাকে দুঃসহ মনে হলে কিংবা লাইফে ডিপ্রেশন আর ফ্রাস্টেশনে ভুগলে অজানা কোন গন্তব্যে ট্রাভেলে করতে বেড়িয়ে পড়ুন তাতে Inexperienced রোমাঞ্চ আপনার মনটাকে সতেজ ও সজীব করে তুলবে।

(১১) আপনি যদি মনে করেন আপনার জীবনটা শুধুই কষ্টক্লিষ্টে ভরা তাহলে হসপিটালের ইমার্জেন্সি ইউনিট/মেন্টাল হাসপিটাল প্রভৃতি এমন স্থান হতে ঘুরে আসুন, খুব সম্ভাবত আপনার মাইন্ড ডাইভার্ট হতে বাধ্য।

(১২) পরিমিত অবসর ছাড়া সবটা সময় ব্যস্ততা এবং ক্রিয়েটিভ কোন কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখবেন- মনে রাখবেন অলস ব্রেইন বিক্ষিপ্ত চিন্তা ভাবনার কারন; আর বিক্ষিপ্ত চিন্তা চেতনা লাইফে কখনোই সুখ – সফলতা এনে দিতে পারে নাহ!

(১৩) অতীতে অতিবাহিত আপাত Non-Productive সময়ের কথা ভেবে আফসোস না করে Self-Analysis এর মাধ্যমে উক্ত যাপিত সময় হতে Learning Lesson প্রস্তুত করে সেটা বর্তমান সময়ে Implement এর মাধ্যমে সফল ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখুন!

(১৪) অপচয় না করে সঞ্চয় করুন, বাজে অভ্যাস ও বাজে সঙ্গ পরিহার করুন, পরিবারকে যথেষ্ট সময় দিন – দেখবেন আপনার লাইফটা কতো সুন্দর হয়ে গিয়েছে।

Tension Solution

আপনি কি দুঃশ্চিন্তায় আক্রান্ত?

সর্বাগ্রে আপনার মেন্টালিটি এমন হওয়া উচিত যে “দুঃশ্চিন্তা শব্দের দুঃ অংশটুকু পরিহার করে যথাসম্ভব শুধুমাত্র চিন্তা করুন” কেননা এই দুঃ অংশটি মূলত দুঃখ ও দূর্দশা ডেকে আনে – তথাপি ইফেক্টিভ চিন্তা তথা থিংকিং আপনার দুঃশ্চিন্তার মূল কারণ সমাধানে আপনাকে সফল ও সুন্দর জীবন উপহার দিতে সক্ষম।

একটু খেয়াল করুন আপনি কোন বিষয় নিয়ে যতোই দুঃশ্চিতা করেন না কেন আদতে সেটার ফলাফল কি হতে পারে? আপনার দুঃশ্চিন্তা কি আপনাকে সমস্যার সমাধান এনে দিতে পারে? কখনোই না! যদিও বলাবাহুল্য যে প্যানিক সিচুয়েশানে দুঃশ্চিতা আসবে এটাই স্বাভাবিক [যতোই উপদেশ বা মোটিভেশান সাজেস্ট করা হউক না কেন] তথাপি উহ্য যথাসম্ভব এড়িয়ে চলায় শ্রেয়তর।

এখন দুঃশ্চিতার এর “দুঃ” অংশ পরিহার করে যে “চিন্তা” সেটার স্বরূপ কেমন হবে?

আপনার ঐ চিন্তা বা থিংকিং অবশ্যই পজেটিভ হতে হবে; পজেটিভ ভাবনায় আপনার দুঃশ্চিন্তার কারণ অনুসন্ধান পূর্বক তা সমাধনে প্রয়াসী হউন [আপনার যতোটুকু সাধ্য বা সামর্থ্য সেটা পরিপূর্ণভাবে পরিকল্পিত উপায়ে ব্যবহার করুন – যেন তা আপনাকে স্যাটিসফেকশানের সাথে সাথে সলিউশন এনে দিতে পারে]।

দুঃশ্চিতার দুঃসময় এড়িয়ে যেতে আপনি মাইন্ড ডাইভার্ট করতে পারেন [বই পড়া/ভ্রমণ/আড্ডা/পরিবার বা প্রিয়জনের সহিত সময় যাপন ইত্যাদি]। অস্বস্তি এড়াতে আপনি ঘুমাতে পারেন [অবশ্যই দুশ্চিন্তা মাথায় নিয়ে ঘুম আনা কঠিন তথাপি পরিপূর্ণ প্রচেষ্টায় আপনি সফল হতে পারেন; কিছুকিছু ক্ষেত্রে হয়তো আপনাকে টেনশন ফ্রি বা স্লিপিং মেডিসিন গ্রহণ করতে হতে পারে – তবে তা অবশ্যই প্রফোশনাল সাইকিয়াট্রিস্ট বা ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়ে তবেই সাজেস্টেড মেডিসিন গ্রহণের পরামর্শ রইলো। মনে রাখা উচিত বিভিন্ন ঔষধ আপনাকে একইরূপ ঘুম এনে দিতে পারে সত্য তবে তাদের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া অবশ্যই ভিন্ন]। প্রকট অবস্থায় দুঃশ্চিন্তা দূর করতে টেনশন ফ্রি (Tension Released) মেডিসিন গ্রহন করতে পারেন [প্রফোশনাল সাইকিয়াট্রিস্ট বা ডাক্তারের সাজেশন অনুযায়ী]। দুঃশ্চিতা দূর করে মনস্তাত্ত্বিক উদ্দীপনা যোগাতে মোটিভেশান এবং প্রশান্তচিত্ত’তা লব্ধিতে মেডিটেশান করতে পারেন।

Mood Off Solution

আপনার কি মন খারাপ?!

আপনি যদি আপনার মন খারাপ দূরীভূত করতে চান তবে সর্বাগ্রে আপনার মন খারাপের কারণ খুঁজে বের করতে হবে [মন খারাপের এই কারণ অনুসন্ধান হয়তো সবসময়ই সহজ নাও হতে পারে যেমন আপনি হয়তো নিজেই বুঝে উঠতে পারবেন না যে ঠিক কোন স্পেসিফিক কারণে আপনার মন খারাপ? সেক্ষেত্রে আপনার সার্বিক অবস্থা, অবস্থান, ক্ষেত্র, প্রেক্ষাপট, পারিপার্শ্বিকতা প্রভৃতি স্বাপেক্ষে আপন মানসিক অবস্থিতি নির্নয় করা কর্তব্য হবে]; তদুপরি মন খারাপের “কারণ” আইডিয়েন্টিফাই করার পর আপনি নিম্নোক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেন:-

(১) আপনার মন খারাপের কারণ সমাধানে সচেষ্ট হউন – হয়তো আপনি চাওয়া মাত্রই উক্ত সমস্যার ইনস্ট্যান্ট সমাধান হয়ে যাবে না সত্য তথাপি আপনি সচেষ্ট মানসিকতার প্রয়াস আপনাকে স্যাটিসফেকশানের সাথে সাথে কার্যত ইফিসিয়েন্সি গেইন করতেও সমর্থ হবেন।

(২) হয়তো আপনাকে কিছু কিছু ক্ষেত্রে আপনার মন খারাপের ঐ কারণ ইচ্ছাকৃত [কনশিয়াস মাইন্ড দ্বারা সাব-কনশিয়াসে উচিত পরিমাণ ফোর্স করা] উহ্য রাখতে ইগনোর তথা কনসিডার বা কম্প্রোমাইজ করার প্রয়োজন হতে পারে; উদাহরণস্বরূপ আপনি আপনার মন খারাপের কারণটি তুচ্ছজ্ঞান করে ভুলে থাকার প্রয়াস [এটি’কে এপ্রোপিয়েট সলিউশন মনে না হলেও কিছুকিছু সময়ে সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এটিই শ্রেয়তর উপায় হিসেবে গণ্য হওয়া উচিত]

(৩) স্বাভাবিকভাবেই সময় অতিবাহিত হতে দিন – প্রাকৃতিগতভাবে সময়ের পরিক্রমায় মনস্তাত্ত্বিক মিথস্ক্রিয়ায় সহজেই আপনার মন খারাপ ম্রিয়মাণ হয়ে যেতে পারে [যদিনা আপনার এই মন খারাপ বড় কোন দূর্ঘটনার সিম্পটম কিংবা গুরুত্ব ক্ষতির আশঙ্কা অথবা নিয়ত মনকে প্রচ্ছন্ন করার সম্ভাবনা না থাকে]।

(৪) নিজেকে যথাসম্ভব ব্যস্ততার মাঝে অবগাহন করান – তাতে মন খারাপ বা মন খারাপের বিষয়ের প্রতি মাইন্ড ডাইভার্ট হতে পারে [এক্ষেত্রেও এই ডাইভার্ট প্রক্রিয়ায় হয়তো কনশিয়াস দ্বারা সাবকনশিয়াসে একটু ফোর্স করার প্রয়োজন হতে পারে]।

(৫) অনেকটা “কাটা দিয়ে কাটা তোলা” এর মতোই মন খারাপের সময় আপনার মন ভালো হবে এমন এক্টিভিটিতে নিয়োজিত হতে পারেন; সেটা ব্যক্তিভেদে হতে পারে বই পড়া বা পছন্দের লেখকের গল্প -কবিতা – উপন্যাস পড়া, অডিও স্টোরি শোনা বা মুভি দেখা, বন্ধুদের সহিত আড্ডা দেওয়া কিংবা আনন্দ মুখর পরিবেশ সময়যাপন, ধর্মীয় উপাসনা, ভ্রমণ বা বেড়াতে যাওয়া, পরিবার বা প্রিয়জনের সহিত সময় কাটানো ইত্যাদি

(৬) মন খারাপ প্রতিকারে কিছু কিছু ইলিমেন্ট ইফেক্টিভ হতে পারে – এই ইলিমেন্ট হতে পারে মেডিসিন (যেমন টেনশন ফ্রি/এন্টি ডিপ্রেশনাল/মুড স্ট্যাবলাইজার ইত্যাদি), ড্রাগ (উদহারন উহ্য রাখা হলো তথাপি যদিও নেশা উদ্দীপক কিছু কিছু উপাদান সাময়িক সময়ের জন্য হ্যাপিনেস ফিলিংস এনে দিত সক্ষম তবুও সামগ্রিকভাবে তা হয়তো ক্ষতিকর হতে পারে), চকলেট, কফি (ক্যাফেইন ব্রেইন’কে উদ্দীপিত করে রিফ্রেশনেস এনে দিতে পারে যা আপনাকে প্রফুল্লতার সাথে সাথে উজ্জীবিত করতে পারে) ইত্যাদি [অনেকের ক্ষেত্রে মন খারাপের খাবার গ্রহণ ইফেক্টিভ হয়ে থাকে]।

(৭) মন খারাপের সময় সাবজেক্টিভ মোটিভেশান পজেটিভ ইনআরশিয়ায় আপনাকে সামনে এগিয়ে যেতে মোমেন্টাম যোগাতে পারে।

(৮) মন খারাপ এর মেডিকেশান হিসেবে মেডিটেশন খুবই ভালো একটি উপায় বটে!

মানব জীবনে মস্তিষ্কের মিথস্ক্রিয়ায় [হিউম্যান সাইকোলজি] সময়ের পরিক্রমায় হাসি আনন্দ বা কষ্ট কান্নার মতোই মন খারাপ একটি খুবই স্বাভাবিক প্রাকৃতিক বিষয়; তথাপি সেই মন খারাপ যেন আপনার ন্যাচারাল লাইফে যথাসম্ভব কম নেগেটিভ ইমপ্যাক্ট সৃষ্টি করে সে বিষয়ে সচেতন থাকা কর্তব্য।

Mood Swing Solution

মুড সুইয়িং খুবই স্বাভাবিক ও সহজাত একটি হিউম্যান সাইকোলজিক্যাল কন্ডিশন যেখানে মন খারাপ বা মন ভালো হওয়া একটি নিয়ত ক্রমান্বয়ী প্রক্রিয়া [এটি সময়, পরিস্থিতি, পারিপার্শ্বিকতা প্রভৃতি অনুযায়ী ফিজিক্যাল-সাইকোলজিক্যাল ক্রিয়ার প্রতিরূপ মাত্র]; তবে এই মন খারাপ বা মন ভালোর চক্রাকার প্রক্রিয়া তখনি হাইলাইট করা কর্তব্য যখন (১) খুবই অস্বাভাবিক ঘনঘন মুড সুইয়িং (২) স্পেসিফিক কোন কারণ ব্যতীত’ই মুড সুইয়িং (৩) মুড সুইয়িং এর প্রতিক্রিয়া খুবই প্রকটভাবে আপনাকে আবিষ্ট বা প্রভাবিত করছে ইত্যাদি।

মুড সুইয়িং সলিউশনে আপনি নিম্নোক্ত পদক্ষেপ গ্রহন করতে পারেন:-

(১) আপনার ঠিক নির্দিষ্ট কোন একটি কারণ বা বিষয়ের ফলে মুড সুইয়িং করছে কি না সেটা আইডিয়েন্টিফাই করার চেষ্টা করুন [এমনটা হতে পারে যে হয়তো একটি নির্দিষ্ট সাবজেক্ট (বিষয়) বা টপিকের দরূণ হঠাৎ করেই আপনার খুব ভালো অনুভূত হচ্ছে – আবার পরক্ষণেই ঐ একই সাবজেক্টের ভিন্ন দিকের হেতু বিষাদ অনুভব করছেন / ঐ সাবজেক্টের আনন্দানুভূতির সময়কাল অতিক্রান্ত হওয়ায় পর মন স্বয়ংক্রিয়ভাবে খারাপ হয়ে যাচ্ছে / ঐ সাবজেক্টের নেগেটিভ বা পজেটিভ দিকসমূহ অনিয়ন্ত্রিতভাবে আপনার মুড সুইয়িং ঘটাচ্ছে]; অতঃপর উক্ত সাবজেক্ট হ্যান্ডল করুন [এই হ্যান্ডলিং প্রক্রিয়া এমন হতে পারে যে উক্ত সাবজেক্ট ইগনোর করা অথবা ভুলে যাওয়ার চেষ্টা কিংবা এমন ইফেক্টিভ কিছু করা যাতে তা আপন মনে আর প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে না পারে]।

(২) যদি আপনার মুড সুইয়িং এর স্পেসিফিক কোন কারণ একান্তই খুঁজে না পান তবে পরিবেশ পরিবর্তন করতে পারেন – তাতে হয়তো পারিপার্শ্বিকতার বদলে আপনার মন স্থিতিশীলতা লাভ করবে; সেক্ষেত্রে অবশ্যই এমন পরিবেশ বা আবহাওয়া প্রেফার করবেন যেন তা আপনার মন’কে রিফ্রেশ তথা উজ্জীবিত করতে সক্ষম।

(৩) মুড সুইয়িং এর সময় আপনার কনশিয়াস মাইন্ড বা সচেতন মন দ্বারা সাবকনশিয়াস মাইন্ড তথা অবচেতন মন’কে এমনভাবে ফোর্স করুন যেন “নাহ…আমার আমি মুড সুইয়িং আমি কেয়ার করি না” এরূপ ভাবনায় উক্ত সময়ে মাইন্ড ডাইভার্ট প্রক্রিয়া যেমন বই পড়া/আড্ডা দেওয়া/সিনেমা দেখা/গান শোনা/প্রিয়জনের সাথে গল্প করা বা সময়যাপন ইত্যাদি প্রক্রিয়ায় নিজেকে নিবিষ্ট করতে পারেন [অবশ্যই প্রাথমিকভাবে এরূপ পরিস্থিতিতে উপরোক্ত কাজগুলি হয়তো বিরক্তি জাগাতে পারে তবে মনের ইচ্ছাশক্তি’কে কাজে লাগাতে সচেষ্ট হওয়া কর্তব্য বটে]।

(৪) মুড সুইয়িং এর অন্যতম একটি কারণ হতে পারে ফিজিক্যাল প্রবলেম যা কিনা সাইকোলজিক্যালি আপনাকে আক্রান্ত করছে – সেক্ষেত্রে আপনার শারীরিক সমস্যা নির্নয়ে মানসিক অবস্থা উন্নয়নে একজন প্রফোশনাল সাইকিয়াট্রিস্ট বা ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া আবশ্যিক কর্তব্য।

(৫) মুড সুইয়িং এর সময় মোটিভেশান স্পিস হয়তো আপনাকে উজ্জীবিত করতে পারে।

(৬) মুড সুইয়িং এর সময় মেডিটেশান আপনাকে সুফলতা দিতে সক্ষম।

(৭) মুড সুইয়িং এর সময় একইরূপ ধর্মীয় উপাসনায় নিবিষ্ট হওয়া এবং আপনার ধর্মের সৃষ্টিকর্তার প্রতি নিজেকে নিবেদিত করায় একরূপ প্রশান্তি অনুভব করতে পারেন।

(৮) মুড সুইয়িং প্রতিকারে মুড স্ট্যাবলাইজিং মেডিসিন গ্রহন করতে পারেন – সেক্ষেত্রে প্রফোশনাল সাইকিয়াট্রিস্ট বা ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ফলোআপ করা কর্তব্য।

দেখুন মুড সুইয়িং হলো মস্তিষ্কের হরমোনের খেলা তাতে হেরে গিয়ে নিজের জীবন বিষিয়ে তুললে দিনশেষে লস আপনারই হবে [অনেকেই হয়তো এমন ভেবে থাকেন যে “এটা আমার মনের দোষ বা মনের সমস্যা – তাতে নিজেই নিজের প্রতি ধিক্কার দিয়ে থাকেন” যা কখনোই কাম্য নয়। মুড সুইয়িং কোন ইচ্ছাকৃত মানসিক ক্রিয়া নয় বরং তা মস্তিষ্কের বিভিন্ন হরমোনের মিথস্ক্রিয়ায় একরূপ অনিয়ত ইমব্যালেন্সড কন্ডিশন মাত্র] – সুতরাং সঠিক মেডিকেশানে সুস্থ জীবন লাভে সুখ ও সফলতা লাভে প্রয়াসী হওয়া আপনার দায়িত্ব ও কর্তব্য।

Loneliness

আমাদের মস্তিষ্ক বড়ই বৈচিত্র্যময় এক জৈবিক যন্ত্র তাতে মানুষ সামাজিক জীব হয়েও নিয়ত চারিপাশের কোলাহল ও মুখরতা স্বত্ত্বেও সে হঠাৎ একাকীত্ব অনুভব করে; আবার অনেকে কেবলি একাকীত্ব উপভোগও করে থাকেন – যা এক সময় প্রকটভাবে মানসিক সমস্যার সৃষ্টি করে থাকে!

আসুন “একাকীত্ব” নামক এই অদ্ভুত ফেনোমেনা প্রতিকার বা প্রতিরোধ আপাত সমাধান খুঁজি…

আপনার অবশ্যই মনে রাখা উচিত হবে যে একাকীত্ব অনুভব অথবা একাকীত্ব উপভোগ উভয়ই খুবই স্বাভাবিক একটি বিষয় তাতে এতোটাও উদ্বীগ্ন হওয়ার প্রয়োজন নেই যদিনা তা আপনার ন্যাচারাল লাইফে নেগেটিভ ইমপ্যাক্ট সৃষ্টি করে! প্রতিনিয়ত কোলাহলে যখন স্নায়ুবিক উত্তেজনা বিরক্তির সীমা অতিক্রম করে তখন একটু একাকীত্ব উপভোগ করা নিশ্চয়ই মন্দ নয়, তদুপরি সবকিছুর মাঝেও নিজের আপন স্বতন্ত্র নিয়ে খানিকটা একাকীত্ব অনুভব করা আহামরি অস্বাভাবিক নয়।

এই সহজাত স্বাভাবিক একাকীত্ব’ই যখন অস্বাভাবিকতার স্বরূপে আপনাকে ক্লিষ্ট করে কিংবা আপনার জীবন দুঃসহ করে তুলে তখন সেটা নিয়ে মাথা ব্যাথার পরিবর্তে একটু মাথা ঘামানো (চিন্তা) করা কর্তব্য হয়ে দাড়ায়; তথাপি আপনি নিম্নোক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেন:-

(১) যথাসম্ভব একাকীত্ব পরিহার করার চেষ্টা করুন – আপনার পরিবার বা প্রিয়জনের সহিত সময়যাপন করার চেষ্টা করুন।

(২) আপনার একাকীত্ব অনুভবের যদি সময় থাকে যেমন সন্ধ্যাবেলা বা বিকাল বেলা ইত্যাদি – তাহলে ঐ সময় যথাসম্ভব একাকী থাকা এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন।

(৩) একাকীত্বের মন খারাপ প্রতিকারে আপনি আপনার পছন্দসই কাজ করতে পারেন যেমন বই পড়া/মুভি দেখা/ঘর গোছানো/বাগান পরিচর্চা ইত্যাদি।

(৪) যদি আপনার নিকটতম এরিয়াতে আপনি একান্তই একাকী হউন (যেমন নতুন এলাকার বাসিন্দা বা এমন এরিয়া যেখানে আদতেই আপনার পরিচিত মানুষজন নেই বললেই চলে) তবে সোস্যাল মিডিয়াতে সময়যাপন করতে পারেন [তবে এই সোস্যাল মিডিয়া যেন আপনাকে বাস্তবিক দুনিয়ার হাসি আনন্দ হতে ইনট্রোভার্ট করে না ফেলে সে বিষয়ে খুবই সচেতন থাকা উচিত]।

(৫) আপনার নিজের লাইফের জন্য একটি রুটিন তৈরী করে ফেলুন [এমন রুটিন যেন তা একাধারে বৈচিত্র্যপূর্ণ ও সৃষ্টিশীল তথা ইফেক্টিভ হয়] বিশেষত একাকীত্ব অনুভবের সময়ে এমন এক্টিভিটি রাখুন যেন তাতে মন প্রফুল্ল থাকে।

(৬) যথাসম্ভব অলসতা ও অযাচিত অতিরিক্ত বিশ্রাম পরিহার করুন – মস্তিষ্ক’কে নিয়ত ইফেক্টিভ ও পজেটিভ চিন্তায় ব্যস্ত রাখুন!

(৭) একাকীত্বের সময় খেলাধুলায় আত্মনিয়োগ করতে পারেন, তা হতে পারে মশারি ক্রিয়া অথবা ইনডোরে মনস্ত্বাতিক ক্রিয়া যেমন দাবা বা লুডু ইত্যাদি।

(৮) একাকীত্বের সময় আপনি মেডিটেশান ফলপ্রসূ হতে পারে।

(৯) একাকীত্বের মন খারাপে আপনি নিজ নিজ ধর্ম অনুযায়ী আপন বিশ্বাসে সৃষ্টিকর্তার প্রতি নিজেকে এমনভাবে নিবেদিত করুন যেন “সৃষ্টিকর্তা স্বয়ং বন্ধু হয়ে আপনার পাশে ও সাথে বিরাজমান” এমন উপলব্ধি জাগ্রত হয়!

(১০) যদিও একাকীত্ব একটি মানসিক প্রতিক্রিয়া তথাপি উহা যদি এতোটাই প্রকটভাবে আপনাকে জর্জরিত করে তবে অবশ্যই অতিদ্রুত প্রফোশনাল সাইকিয়াট্রিস্টের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

একাকীত্বে একাকী উদাস মন যেমন মধুর কাব্য সৃষ্টি করে তেমনি মানসিক অসুস্থতার কালিমাতে আপনাকে নোংরা নর্দমায় নিমজ্জিতও করতে পারে – সুতরাং সচেতন মনে আপন ইচ্ছাশক্তি দিয়ে একাকীত্বের কষ্ট বা ক্লিষ্ট দূর করে সফলতা লাভ করা শুধু কর্তব্য নয় বরং এটা আপনার দায়িত্বও বটে!

Depression Solution

সহজ ভাষায় ডিপ্রেশন হলো মন খারাপ বা হতাশা কিংবা প্রাণোচ্ছলহীনতা অথবা সবকিছুতেই কেমন জানি “ভালো লাগে না – ভালো লাগে না” এমন ভাব; যদিও ডিপ্রেশন খুবই প্রচলিত সহজ এবং সস্তা একটি শব্দ তথাপি অধিকাংশ স্নায়ুবিক সমস্যার শিকড় হতে শেখড়ে এই ডিপ্রেশনের অবস্থান!

অনুসন্ধান:

যাবতীয় জ্ঞাত কারণ কিংবা অজ্ঞাত কারণের হেতু মানসিক অবসন্নতা, হীনতা বা হীনমন্যতা এবং প্রতিক্রিয়াশীল বিরূপ ভবাপন্নতা প্রভৃতির এক বা একাধিক প্রভাব’ই ডিপ্রেশন – যা কিনা আশা, ভরসা বা আস্থা, অনুপ্রেরণা ও অনুপ্রেষণা হারিয়ে মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত করে তুলে।

কারণ:

বায়োলজিক্যাল রসায়নিক ল্যাবে চোখ রাখলে দেখা যাবে আনন্দের রঙ্গিলা হরমোন ডোপমিন আর সুখানুভূতির রঙ্গিন সোরেটোনিন হরমোন আমাদের ব্রেইনে ইলেকট্রিক্যাল ইম্পালসে যে মধুর মানবিক তরঙ্গ তৈরী করে – এসবের বিপরীতে ডিপ্রেশন মূলত হরমোনাল মাত্রা হ্রাস ও ভারসাম্যহীনতায় সৃষ্ট একটরূপ কমপ্লেক্স নিম্নগামী মানসিক অবস্থিতি মাত্র!

ডিপ্রেশন থেকে মুক্তির উপায়:

ডিপ্রেশন থেকে রিলিফ পাওয়ার জন্য

(১) আপনার ডিপ্রেশনের সঠিক কারণ অনুসন্ধান পূর্বক তা সমাধানে সচেষ্ট হউন

(২) আপনার ইচ্ছাশক্তি’কে কাজে লাগান [এমনভাবে আপনার ইচ্ছাশক্তির ইউটিলাইজেশান ঘটান যেন আপনার অবচেতন মনের জড়তা সচেতন মনের অনুপ্রেরণার প্রেষণা প্রযুক্ত হয়]

(৩) যদি আপনার কোনরূপ নেশা বা আসক্তি থাকে তা যথাসম্ভব পরিহার করার চেষ্টা করুন

(৪) আপনার ভালো লাগে এমন কাজেে নিজেকে নিযুক্ত করুন

(৫) অহেতুক অবসর পরিহার করে নিজেকে যথাসাধ্য ইফেক্টিভ এক্টিভিটিতে ব্যস্ত রাখুন

(৬) ধর্মীয় উপাসনা ফলপ্রসূ হতে পারে

(৭) মোটিভেশনাল স্পিস আপনাকে উজ্জীবিত করতে পারে

(৮) মেডিটেশন আপনাকে প্রশান্ত চিত্তে ডিপ্রেশন হতে Relaxation এনে দিতে পারে

(৯) পরিবেশ পরিবর্তন বা এনভায়রনমেন্টাল চেইঞ্জ আপনার মানসিকতা উন্নয়নে কার্যকরী হতে পারে

(১০) পজেটিভ থিংকিং করুন এবং যথাসম্ভব নেগেটিভ মেন্টালিটি পরিত্যাগ করুন

(১১) আত্ম বিশ্বাসী ও আত্মপ্রত্যয়ী হউন

(১২) আপনার শারিরীক সুস্থতা সুনিশ্চিত করুন

(১৩) তদুপরি ডিপ্রেশন যদি প্রকটভাবে আপনার জীবন’কে নিবিষ্ট করে তবে অবশ্যই একজন প্রফোশনাল সাইকিয়াট্রিস্ট এর শরণাপন্ন হউন।

Introversy Solution

আমাদের মাঝে এমন অনেকেই হয়তো আছেন যারা ঘরকুনো – বিষয়টা এমন নয় যে তারা সবাই ইনট্রোভার্ট [অন্তর্মুখী] তবে এটাও ইনট্রোভার্সির একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য হতে পারে এমনকি ইনট্রোভার্সির সর্বোচ্চতম ক্ষতিকর স্টেটে নিজেকে ঘরকুনো করে ফেলার মানসিকতা দেখা যায়; সুতরাং মাত্রাতিরিক্ত ইনট্রোভার্সি হতে নিজেকে মুক্ত রেখে সুস্থতা সুনিশ্চিত করা কর্তব্য।

একজন মানুষ নিজেকে ইনট্রোভার্ট করার বহুমাত্রিক কারণ থাকতে পারে যেমন সামাজিক, পারিবারিক, ধর্মীয়, আচার-আচরণগত পার্থক্য, বৈষম্য ইত্যাদি; তথাপি ইনট্রোভার্ট এর কিছু কমন বৈশিষ্ট্য হতে পারে নিম্নরূপ:-

সহজে কারো সঙ্গে মিশতে না পারা / কম কথা বলা এবং বাক্যলাপে অপটু হওয়া / সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আগ্রহী না হওয়া / আড্ডায় সহজে যোগাদান না করা / ভালো শ্রোতা বটে কিন্তু কথা বলতে গেলে ভ্যাবাচেকা খেয়ে ফেলা / পছন্দের কোনো বন্ধুর সঙ্গে পছন্দের কোনো বিষয় নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথা বলার মানসিকতা / অন্য মানুষ ভুল বুঝলেও নিজেকে প্রমাণ করতে আগ্রহ না পাওয়া ইত্যাদি।

আসুন এখন ইনট্রোভার্সির সলিউশান খুঁজি:-

আপনি যদি নিজের ঘরকুনো মানসিকতা হতে মুক্তি চান তবে আপনি যে শুধু ‘চান’ তথা ‘ইচ্ছাশক্তি’ সেটাই কোয়াইট এনাফ; মনে রাখুন “আপনি আপনার নিজেকে নিয়ে কি ভাবছেন সেটাই গুরুত্বপূর্ণ তথাপি অন্যান্য মানুষ আপনাকে নিয়ে কি ভাবলো সেটা আপনার জন্য ততোটাও ইফেক্টিভ নয়”। জীবনের পরীক্ষাগৃহে অন্য মানুষেরা আপনার পরীক্ষক নন বরং একরূপ নীরব পর্যবেক্ষক মাত্র [হয়তো অন্যের পর্যবেক্ষনে পারিপার্শ্বিকতা হতে বিরূপ মন্তব্য আসতেই পারে – তথাপি ঐসকল মন্তব্য যেন আপনার গন্তব্যে পৌছাতে বাঁধা নয় বরং অনুপ্রেষনা যোগায় – এমনটাই ভাবতে শিখুন]; তাতে আপনার নিজের জন্য ভালো/মন্দ হওয়ার সম্ভাব্যতা আপাতভাবে প্রায় শূন্য যতোটা না আপনি নিজেই আপনার জীবনের ফলাফলের জন্য দায়ী – সুতরাং অপরের জন্য নিজেকে সীমাবদ্ধ রেখে গুটিয়ে থাকলে দিনশেষে আপনার পৃথিবীটাই সংকীর্ণ হতে হতে এতোটাই সংক্ষিপ্ত হয়ে যাবে যে নূন্যতম দম ফেলার জন্য একটি একাকী চার দেয়ালের ঘরও বড্ড আঁটোসাটো হয়ে যাবে – কথাগুলো যে স্রেফ মোটিভেশান বা আত্ম স্বান্তনার জন্য এমনটাও নয় বরং আপেক্ষিকভাবে অবশ্যই পরম সত্য!

পদক্ষেপ:-

আপনি বাইরে বের হউন – সেখানে এমন নয় যে সবাই আপনাকে আড়চোখে দেখবে [কেউ আপনাকে আড় চোখে দেখছে এটার অর্থ হলো আপনিই বরং তাকে আঁড়চোখে দেখছেন যেন সে আপনাকে দেখছে কিনা সেটা যাচাই করছেন] >>> এখন নিজের সাইকোলজিক্যাল ইনআরশিয়া বা মানসিক জড়তা হতে এক ঝটকায় সকল অসারতা দূর করুন [অনেকটা আড়মোড়া দিয়ে জাগ্রত হওয়া মতো] >>> কে কি ভাবলো সেটা আপন মনে ভাবনা পরিহার করুন [আপনার আপনিকে নিয়ে কে কি ভাববে সেটা আপনি নিজেই নিজের এক্টিভিটি দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম] >>> সকলের সহিত হাসিমুখে কথা বলুন এবং অন্যান্য সামজিক উৎসব বা অনুষ্ঠানে আপনার জায়গা করে নিন [খেয়াল করুন প্রকৃতি শূন্যতা পছন্দ করে না – তাই এই যে এতোদিন আপনি অনুপস্থিত ছিলেন তাতে নতুন আপনার আগমনে সবাই যে জায়গা ছেড়ে দিবে এমনটা নয় বরং আপনাকেই জায়গা করে নিতে হবে তথাপি জায়গা তৈরী করে নেওয়া জানতে হবে] >>> মাঝে মাঝে হয়তো বিরক্ত বা বিব্রত লাগতে পারে তবে সেটা ইগনোর করবেন >>> প্রকৃতির মুক্তির আস্বাদে নিজেকে মুক্ত ডানায় এমন এক কোকিল পাখির মতো মনে করুন যেন যেখানেই থাকবেন সুমিষ্ট ডাকে সবাইকে বিমোহিত করবে [এখানে আপনার ঐ সুমিষ্ট ডাক হলো আপনার অন্তর্গত যোগ্যতা] >>> একটি নিত্য রুটিন তৈরী করুন তাতে প্রতিদিন কতোটুকু সময় ঘরের বাইরে থাকবেন – কোথায় কোথায় কোনদিন থাকবেন – কিভাবে সেই সময় যাপন করবেন – কাদের সহিত সময় যাপন করবেন [একঘেয়েমি মানসিকতার ব্যক্তিদের পরিহার করুন এবং সম্ভব হলে নতুন নতুন মানুষদের সহিত পরিচয় ও পরিচিতি বর্ধিত করুন] – সেই সময়ের উপযোগীতা আপনার ওপর কিরূপ প্রভাব বিস্তার করবে ইত্যাদির খসড়া তৈরী করবেন >>> সবিশেষ আপনি কোন রোগী নন বরং আপনার অনন্য বৈশিষ্ট্য প্রকৃতির মাঝে ফুটিয়ে তুলতে সচেষ্ট হউন!

ইনট্রোভার্ট মানসিকতা প্রতিকারে আপনি

(১) সেল্ফ কনফিডেন্ট হউন

(২) নিজের অবস্থা ও অবস্থান স্বাপেক্ষে আপনার প্রতিভা তথা সৃজনশীলতা উপযুক্ত প্লাটফর্মে মেলে ধরুন

(৩) আপনার আপনজন বা প্রিয়জনের সহিত মনের কথা খুলে বলুন

(৪) নিজের জীবন নিয়ে আপন ভাবনা ও ডেইলি এক্টিভিটিস ডাইরিতে লিখুন এবং তা মূল্যায়ন করুন [এই মূল্যায়ন যেন আজকের দিনের চেয়ে আগামীকালের দিনটি আরও সুন্দর ও ইফেক্টিভ হয় সেটা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকট হউন]

(৫) সমালোচনার ভয় ইগনোর করুন

(৬) অন্যের সমালোচনা হতে ডিমোটিভেটেড না হয়ে নিজের ভুলগুলো সংশোধনে প্রয়াসী হউন

(৭) যথাসম্ভব নিজের রিএ্যাক্ট নিয়ন্ত্রিত রাখুন

(৮) সমাজের অন্যান্যদের প্রতি বিরূপ ভাবনা পরিহার করুন [কারো করো ক্ষেত্রে হয়তো এমন হতে পারে যে “নিজেকে সবার চেয়ে ভালো এবং বাকি অন্য সবাইকে খারাপ জ্ঞান করা” এমন অবান্তর চিন্তা চেতনা হতে নিজেকে মুক্ত রাখা]

(৯) নিজেকে অন্যান্যদের স্বাপেক্ষে অযোগ্য বা ছোট ভাবনা কিংবা নিজেকে দোষারোপ করার মানসিকতা পরিত্যাগ করুন

(১০) পজেটিভ মাইন্ডসেট সুনিশ্চিত করুন; সর্বোপরি আপনার ইনট্রোভার্সি যদি এতোটাই সীমা ছাড়িয়ে যায় তা আপনার প্রত্যাহিক জীবনের জন্য গুরুতর ক্ষতি বা দূর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে তবে যথাসম্ভব অতিদ্রুত একজন সাইকিয়াট্রিস্টের শরণাপন্ন হওয়া আবশ্যিক কর্তব্য।

Rude Behavior

আমাদের প্রত্যাহিক জীবনে অনেক সময় অনাকাঙ্ক্ষিতভাবেই এমন পরিস্থিতির উদয় হয় যখন না চাইতেই অনিচ্ছাকৃত অন্যের সহিত খারাপ ব্যবহার করতে হয় বা করা হয়ে যায়; আবার এমন অনেক অস্থিতিশীল মানসিকতার মানুষ আছেন যারা নিয়ত সর্বদাই অন্যের সহিত খারাপ ব্যবহারে অভ্যস্ত – আসুন আজ আলোচনা করা যাক:-

আমরা কেন অন্যের সাথে খারাপ ব্যবহার করি?

মূলত যখন আমরা পরিবেশ-পারিপার্শ্বিকতায় এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হই যখন কিনা মানসিক অস্থিতিশীলতায় বিরূপভাব ধারণ করতে বাধ্য হতে হয় তখনই প্রতিক্রিয়াস্বরূপ আমরা অন্যের সহিত খারাপ ব্যবহার বা দুর্ব্যবহার করে থাকি; অবশ্যই দুর্ব্যবহার সর্বদাই পরিত্যাজ্য তথাপি এটি একটি সহজাত স্বাভাবিক মানসিক ক্রিয়া মাত্র!

অন্যের সহিত খারাপ ব্যবহারের প্রতিক্রিয়া!

আমরা যখন অন্যের সহিত খারাপ ব্যবহার করি তখন বিপরীত পক্ষ হতেও ক্রিয়ার প্রতিক্রিয়া আসবে সেটাই স্বাভাবিক; এই প্রতিক্রিয়া এর স্বরূপ হতে পারে যে ঐ ব্যক্তিটি (অপরপক্ষ) আপনার সহিত একইভাবে খারাপ ব্যবহার যেমন গালি-গালাজ করতে পারে কিংবা শারিরীক আঘাত করতেও প্রয়াসী হয়ে উঠতে পারে; নচেৎ যদি একান্তই আপনার উপস্থিত প্রভাবে কিছুই করতে না পারেন তবে মনে মনে গালি দিবে নয়তো অভিসম্পাত করতেই পারে আবার এমনটাও হয়তো হতে পারে তিনি আপনার জন্য এরূপে শুভকামনা করছেন যেন “আপনি যেন ভবিষ্যতে দুর্ব্যবহার পরিহার করতে সমর্থ হউন” মোদ্দাকথা আপনার খারাপ ব্যবহারের কোন না কোন প্রতিক্রিয়া তো অবশ্যই রইবে [বস্তুত সকল ক্রিয়ারই এক সাম্যক প্রতিক্রিয়া বিদ্যমান]।

অন্যের সহিত খারাপ ব্যবহারের পরিণতি!

আপনি যদি অন্যের সহিত খারাপ ব্যবহার করেন তবে যে প্রতিক্রিয়া আপনার সম্মুখে আসবে সেটার স্বরূপ আপনার ওপর কিরূপে লব্ধ হবে সেটাই মুখ্য বিবেচ্য। আপনি যার সহিত খারাপ ব্যবহার করছেন তিনি যদি প্রতিক্রিয়া স্বরূপ

(১) আপনার সাথেও খারাপ ব্যবহার করে তবে তা সহজাত স্বাভাবিক – [আপনি যেভাবেই সম্ভব ভালো ব্যবহারে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করুন না কেন] আদতে এই যে প্রতিক্রিয়া আপনার ওপর লব্ধি হলো তাতে অপর পক্ষ হতে সাম্যতা অধিষ্ঠিত হওয়ায় তাতে আপনার ওপর কোন বিরূপতা অবশিষ্ট রইবে না – সুতরাং মানসিকভাবে আপনি নিজেকে নির্ভার অনুভব করতে পারবেন

(২) যদি অপরপক্ষ প্রত্যুত্তর দিতে না পারে এবং একান্তই চুপসে যায় তবে তার মনে আপনার ঐ দুর্ব্যবহার দাগ কেটে রইবে এবং তা হয়তো পরবর্তীতে কথা / কাজ / অনুভূতি ইত্যাদি দ্বারা উদগিরিত হতে পারে; এরূপ অবস্থায় আপনার উচিত হবে যে অপরপক্ষের সহিত এমনভাবে মীমাংসা করা যেন মানসিকভাবে উভয়ের স্থিতি’তে সাম্যতা প্রতিষ্ঠিত হয়।

(৩) যদি অপরপক্ষ আপনাকে অভিসম্পাত করে এবং তা জানান দেয় – তবে আপনি এই ভেবে নির্ভার হউন যে “অভিসম্পাত একটি অকার্যকর মেন্টাল স্টেটমেন্ট মাত্র” যা আদতে কার্যত ক্রিয়াশীল হয়না [তদুপরি আপনার মনে যদি ভীতির সঞ্চার ঘটে তবে তা আপনাকে আবিষ্ট করে অনিষ্ট করতে সক্ষম – এক্ষেত্রে নির্লিপ্ত ইগনোর করায় হতে মোক্ষম মানসিক হাতিয়ার] তথাপি যেহেতু অভিসম্পাত করেই ফেলেছে জানান দিয়ে সেহেতু একরূপ সাইকোলজিক্যাল সাম্যতা হয়েই গেল!

দুর্ব্যবহার হতে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখুন!

আপনি যথাসম্ভব নিজেকে দুর্ব্যবহার হতে বাঁচিয়ে রাখতে প্রয়াসী হউন কেননা সেটা শুধুমাত্র অন্যের চোখে আপনাকে ভালো মানুষ হিসেবে পরিস্ফুটিত করবে এমন নয় বরং অভ্যন্তরীনভাবে আপনাকে মানসিকভাবে এমন তৃপ্তি দান করবে যেন আপনি কোনরূপ বিরূপতা ব্যতিরেকেই নিজেকে নির্ভার অনুভব করবেন। একান্তই যখন দুর্ব্যবহার করার মানসিক অবস্থিতি অনুভব করবেন তখন নিজেকে প্রশান্ত করতে আপনি Reverse Counting করতে পারেন কিংবা উক্ত পরিবেশ হতে আপনাকে দূরে সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে যান কিংবা মধুর কোন স্মৃতির কথা স্মরণ করে আপাত পরিস্থিতি এড়িয়ে যেতে মাইন্ড ডাইভার্ট করার প্রয়াস নিন।

সর্বোপরি মনে রাখা উচিত হবে যে “দুর্ব্যবহার করতে পারা পাশবিক প্রবৃত্তি তাতে আলাদা করে কোন ক্রেডিট নেই – বরং মানুষ সমাজে কতোজন ভালো ব্যবহার করতে পারেন কিংবা দুর্ব্যবহার এড়িয়ে চলতে পারেন সেটাই মূল গুণ”!

Drug Addition Solution

নেশা হলো মূলত একরূপ উদ্দীপনা যা স্নায়ুতন্ত্রে ব্যতিক্রমী আবেশ সৃষ্টি করে যা সময়ের পরিক্রমায় একরূপ অভ্যাস তথা আসক্তি জন্মায় [অভ্যাস >>> অভ্যস্থতা >>> নেশা বিহীন থাকতে না পারার অনুভূতি >>> অসুস্থতা >>> মানসিক ভারসাম্যহীনতা]।

নেশার আসক্তি হতে মুক্তির আগে আসুন জেনে নিই

নেশা কেন করা হয়?

মূলত নেশা করা হয় গৎবাঁধা জীবন পরিক্রমা হতে রিলিফ নিয়ে একটু ব্যতিক্রমী উদ্দীপনায় আপনার “আপনি” কে আলোড়িত করতে; তাতে ঐ উদ্দীপনা যেন এমন ফিলিংস তথা অনুভূতি দেয় যেন সে যা চাচ্ছিলো তাই যেন পায় [কল্পনা বা অনুভবে]! বস্তুত বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন কারণে নেশা করে এবং তাদের ক্ষেত্রে ঐ ভিন্ন ভিন্ন প্রেক্ষাপটে নেশার প্রতিক্রিয়া বিভিন্ন স্বরূপে প্রদর্শিত হয় [যেমন কেউবা নেশা করলে ভাবুক হয়, কেউ হয় মাতাল, কারোর জাগে সৃজনশীলতা আবার কারোর নাকি যৌনতা – তথাপি নেশার ফলাফল কি হবে সেটা ব্যক্তির মানসিকতা ও ব্যক্তিত্বের ওপর নির্ভরশীল অনেকটাই আনপ্রেডিক্টেবল বিষয় যা অলীক ভ্রান্তির অবকাশ ঘটায় মাত্র]।

নেশার আসক্তি হতে মুক্তির উপায়:

নেশার আসক্তি হতে মুক্তির জন্য অনন্যতম উপায় হলো “ইচ্ছাশক্তি” যোখানে “আপনি নেশা হতে মুক্তি হতে চান” এই প্রবল মনোবল আপনাকে রিলিফ দিতে পারে [তবে এই কথাটিও জেনে রাখা উচিত হঠাৎ করে একবারে নেশা জাতীয় দ্রব্য বন্ধ করে দিলে তাতে মস্তিষ্কে ক্ষতিকর প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে; সুতরাং একটি নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে নেশার আসক্তি হতে মুক্তির প্রক্রিয়া অপেক্ষাকৃত নিরাপদ]। নেশার আসক্তি হতে মুক্তির জন্য অবশ্যই আপনার উচিত হবে একজন প্রফোশনাল সাইকিয়াট্রিস্ট বা মাদকাসক্তি নিরাময়ে স্পেশালিষ্ট চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া কেননা আপনি কোন ড্রাগে কতোটুকু আসক্ত – সেই ড্রাগ আপনার মস্তিষ্কে কিরূপ প্রভাব বিস্তার করেছে – ঐ ড্রাগে আপনার প্রতিক্রিয়া কেমন ইত্যাদি যাবতীয় বিষয় বিচারে একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসক’ই কেবলমাত্র আপনাকে এপ্রোপিয়েট মেডিসিন [যা কিনা আপনার নেশার আসক্তি দূর করে সুস্থতা আনায়নে শারিরীক মানসিকভাবে কার্যকরী হবে] এবং সঠিক লাইফস্টাইল রুটিনের ধারণা দিতে পারবেন যা আপনার জন্য ইফেক্টিভ হবে [এক্ষেত্রে ডাক্তারের নিকট মাদকাসক্তি বিষয়টি উপস্থাপনে জড়তা বা সংকোচ পরিহার করা কর্তব্য; মনে রাখা উচিত একজন প্রফোশনাল সাইকিয়াট্রিস্ট আপনার সুস্থ জীবন আনায়নে আপনার সর্বাপেক্ষা নিকট বন্ধু]।

নেশার আসক্তি প্রতিকার বা প্রতিরোধে নিম্নোক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেন:

(১) নেশার আসক্তি হতে মুক্ত থাকার জন্য আপনাকে ভিন্ন এক Decent নেশায় মগ্ন হতে হবে [বিষয়টা অনেকটা “কাটা দিয়ে কাটা তোলা” এর মতোই; এক্ষেত্রে আপনি Drug দ্বারা নেশা করলে যে অনুভূতি পেতেন সেটাই ভিন্নভাবে ড্রাগ ছাড়াই Decent উপায়ে খুঁজে নিতে হবে। উদাহরণস্বরূপ বিবেচনা করি আপনি লাইফে Thrill পেতে ড্রাগ দিয়ে নেশা করতেন – তাহলে Decent উপায়ে একইরূপ Thrill অনুভব করবেন এমন এক্টিভিটি যেমন সাসপেন্সিভ মুভি দেখা, রহস্য গল্প বা উপন্যাস পড়া, এক্সাইটেড গেইমিং, আনসার্টেইন ট্রাভেলিং/লং ড্রাইভ/হাইকিং ইত্যাদির মাধ্যমে মাইন্ড ডাইভার্টেশনের প্রয়াস নিন]।

(২) নেশার আসক্তিতে স্পেসিফিক সময় [এমন সময় যখন সচরাচর নেশার আসক্তি প্রবলতর হয়] যথাসম্ভব মাইন্ড ডাইভার্ট করার চেষ্টা করুন।

(৩) নেশার আসক্তি মুক্তি’তে শেয়ারিং ও কেয়ারিং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে – সুতরাং নির্ভরযোগ্য, বিশ্বস্ত এবং আপনার আপনার প্রতি স্নেহশীল এমন প্রিয়জনের সান্নিধ্যে আপনার মনের কথাগুলো শেয়ার করুন; যেন তাতে নিজের মনের অব্যক্ত অনুভূতির আদান প্রদানে আত্ম প্রশান্তি লাভ করতে পারেন।

(৪) নেশার আসক্তি হতে মুক্ত হতে একইরূপ “ভালোবাসা” এর বিশেষ তাৎপর্য বিদ্যমান তাই আপনার প্রতি অন্য সবার ভালোবাসা যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি একইভাবে আপনারও অন্যদের ভালোবাসা কর্তব্য – যেন তাতে মানসিক উন্নয়ন ঘটে!

(৫) নেশার আসক্তি মুক্তিতে সার্বিকভাবে অসৎ সঙ্গ পরিত্যাগ করুন; একইসাথে অন্য কারো সহিত মিলে নেশা করতেন এমন সার্কেল ত্যাগ করা আবশ্যিক কর্তব্য।

(৬) পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী এবং ভালো বন্ধুদের সহিত কোয়ালিটিফুল সময় যাপন করুন!

(৭) যথাসম্ভব সামাজিকতা রক্ষা করুন – সামাজিক অনুষ্ঠান ও উৎসবে অংশগ্রহণ করুন।

(৮) নিজের জীবন’কে সুন্দর সময়ের রুটিনে সুন্দরভাবে বিন্যস্ত করুন।

(৯) শারীরিক সুস্থতায় সুষম খাবার গ্রহন করুন – ডায়েট মেইনটেইন করুন – খেলাধুলা এবং ব্যায়ামে নিজেকে নিয়োজিত করুন।

(১০) ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলুন এবং ধর্ম কর্মে আপনাকে নিয়োজিত রাখুন।

(১১) মেডিটেশন বিশেষ ফলপ্রসূ হতে পারে।

সবিশেষ নেশা হলো হরমোনোর খেলায় একরূপ মানসিক পরিতৃপ্তি পাওয়া অযাচিত পন্থা – যা এড়িয়েও সুস্থভাবে আপনি সাইকোলজিক্যাল এন্টারটেইনিং ফিলিংস পেতে পারেন; সুতরাং নেশার আসক্তিতে মানসিক ভারসাম্যহীনতায় আপন জীবন বিনষ্ট করার পরিবর্তে সুখী জীবন উপভোগ করবেন এটাই কাম্য!

Psychological Shock

Psychological Shock এর মাধ্যমে আপনার থমকে থাকা জীবনে গতির সঞ্চারণ ঘটান!

এমন অনেক সময়ই হয়তো আমাদের জীবনে আসে যখন “সবকিছু ঠিক থাকার পরও যেন আমাদের জীবনে কোনকিছুই আর সঠিক হয়না” অথবা “আপনি খুব বেশী সক্রিয়ভাবে প্রচেষ্টার পরও কাঙ্খিত সফলতা লাভ করতে সক্ষম হন না” কিংবা “সবকিছু ঠিকঠাক থাকার পরও কেনকিছুই যেন ঠিক নয়” এমন বিরক্তিকর অসহ্য বিড়ম্বনা একজন ব্যক্তির সাইকোলজিক্যাল সঞ্জীবনী শক্তি হরণে তাকে জীবিত অবস্থায় মানসিক মৃত্যুর সম্মুখীন করে!

এমন সমস্যা নিরূপণ পূর্বক পূর্ণভাবে নির্মূল (সমাধান) করতে আমাদের প্রয়োজন হবে সঠিকভাবে সুনির্দিষ্ট সাইকোলজিক্যাল শক (Psychological Shock)!

আসুন বিষয়টা সহজ করে বুঝিয়ে বলা যাক…

আমরা যখন ঘুমিয়ে থাকি তখন আমদের কনশিয়াস তদ্যপি ব্রেইন প্রায় অচেতন [পরম অচেতন নয় বরং সাব-কশিয়াসের কৃতিসুলভ সক্রিয়তায় বিশেষ সচেতনতা এবং আনকশিয়াসের সহজাত অচেতনতা মিলে বিশেষ অবচেতন অবস্থান] হয়ে পড়ে – তখন ঘুমের মাঝে কেউ যদি জোরে (তীব্রভাবে) আপনাকে ধাক্কা দিয়ে ঘুম ভাঙ্গায় তখন আপনি সজাগ – সতর্ক – সক্রিয় হয়ে উঠেন [যদিও এই হঠাৎ জাগরণে অতি তাৎক্ষনিক সাময়িক তালকানা হয়ে যাওয়াটাও অস্বাভাবিক নয়] – এই ধাক্কা বা Shock আপনাকে বাস্তবতায় সক্রিয় করে তুলে! আবার বিশেষ ভাবনা কিংবা মোহে আবিষ্ট থেকে যখন আপনি এক নিষ্ঠ ধ্যানে কল্পবিলাসে মগ্ন থাকেন তখন হঠাৎ কারোর কথা বা শব্দ অথবা আলো কিংবা ফিজিক্যাল টাচ/প্রেসার প্রভৃতি দ্বারা আপনার চিন্তায় ছেদ পড়ে – যা আপনাকে বস্তবের উপস্থিতি জানান দেয়! এমন আরও বহু প্রকাশ্য/অপ্রকাশ্য বিষয়গুলো আমাদের জীবনে তথা ব্রেইনে জানতে/অজান্তে প্রায় প্রতিনিয়তই ঘটে চলেছে…. রূপকভাবে এই সম্বিত ফিরে পাওয়া ফ্যাক্ট’টিকে “সাইকোলজিক্যাল শক” হিসবে নির্ণীত হলো!

“পথ্য ব্যবহারে পূর্বে যেমন অসুখের কারণ জানা অত্যাবশ্যক” তেমনি উপরোক্ত মানসিক বিড়ম্বনার মূল কারণ বা হেতু সন্ধান করাটাও গুরুত্বপূর্ণ বটে!

সম্ভাবত আমাদের ব্রেইনের কনশিয়াস (সচেতন) অংশ এবং সাব-কনশিয়াস (অবচেতন) অংশ [হতেই পারে আনকনশিয়াসও এই প্রক্রিয়ায় লুপ্ত থেকে সুপ্তভাবে সূক্ষ নিয়ামক] পরস্পর সমানভাবে ধ্রুবকীয় পরিমাণ সক্রিয় না থাকলেও তাদের মাঝে সঠিক ও সুস্থিত সাম্যাবস্থা বিরাজ করে – তথায় কোন মানসিক বিরূপতায় এই ব্যালেন্সিভ কন্ডিশন [ভারসাম্য] যখন বিনষ্ট হয় তখন কনশিয়াসের অযাচিত অধিকতায় আমাদের মনে আবেগ-ইমোশন হ্রাসে আপনার কল্পনা সক্ষমতা কমে ডিপ্রেশন বা ফ্রাস্ট্রেশনে ভোগায়; আবার নিরতিশয় সাব-কনশিয়াস যখন মাত্রাতিরিক্ত Highly Excessive হয়ে ওঠে তখন সারাক্ষণ কল্পনার সাগরে সাতার কাটতে সময় যায় – ফলে বাস্তবতার সহিত যৌক্তিকতা এবং কল্পনার সহিত ক্রিয়েটিভ আইডিয়ার মাঝে সুতা কাটাকাটি’তে সবকিছুই ছন্নছাড়া আর অসাধ্য হয়ে যায়!

মস্তিষ্কের এই নিউরো শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে আমাদের প্রয়োজন হবে উপরোক্ত দুইটি উদহারণের রূপকভাবে ব্যাখ্যাকৃত বিষয়ের ন্যায় ধাক্কা অর্থাৎ সাইকোলজিক্যাল শক; Psychological Shock কোন সুনির্দিষ্ট বিষয় নয় এবং এটি ব্যক্তি বিশেষের সামগ্রিক অবস্থা, অবস্থান, প্রকৃতি, পরিবেশ, পরিস্থিতি, পারিপ্বার্শিকতা প্রভৃতির ওপর নির্ভরশীল Specified System; তবুও আসুন একটি সাধারণ সার্বজনীন Psychological Shock এর সূত্র বাতলে দেয়ার চেষ্টা করি….

ক্রিয়া পদ্ধতি:

সবচেয়ে সহজ ও নিরাপদ এবং আপেক্ষিকভাবে প্রায় সর্বক্ষেত্রে নূন্যতম হলেও রেসপন্সিভ Psychological Shock হলো “আপনার দম একটি নির্দিষ্ট সময় যতোক্ষন অবধি পারেন ততোক্ষন [সতর্কতা আবশ্যক] আটকে রাখুন – এরপর হুট করে হঠাৎ প্রশ্বাস ছেড়ে দিন; এখন প্রায় সাথে সাথেই আকাঙ্ক্ষিত নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে তাৎক্ষণিক ভাবুন “নাহ…এইতো আমি…এটাই আমার কাজ…এমনটাই তো হওয়া উচিত…এটাই করতে হবে আর এটাই করবো….সবিশেষ সফল আমি হবোই হবো” এমনি মানসিক অনুভব!

যদিচ Psychological Shock বিষয়টি হতে পারে মোটিভেশন কিংবা ক্ষেত্রবিশেষে ডিমোটিভেশান, আকার-ইঙ্গিত, চমক, ছলনা, দূর্ঘটনা, আঘাত, ভালোবাসা ইত্যাদি; তথাপি আপনার জন্য উপযুক্ত হয় এমনটি প্রয়োজন স্বাপেক্ষে উপরোক্ত ধারায় [চেতনায়] প্রস্তত করে নিতে নিতে পারেন!

Conclusion

মানব জীবন রিপেয়ারে পরিবেশ – পরিস্থিতি – প্রেক্ষাপট – অবস্থা – অবস্থান – সমস্যা – প্রত্যাশা প্রভৃতি বিবেচনায় বিভিন্ন অবস্থিতির উদ্ভব হওয়াটা অস্বাভাবিক নয় তথাপি আপনি যদি একটু গভীর ভাবনায় অবজারভেশন করেন তাহলে রিয়েলাইজ করতে সক্ষম হবেন যে “একজন মানুষের জীবনে যখন যেরূপ অবস্থিতির’ই হউক না কেন আদতে উক্ত Psychological Statement এর Development প্রক্রিয়া হিউম্যান ব্রেইনের কনশিয়াস মাইন্ড (সচেতন অংশ) – সাবকনশিয়াস মাইন্ড (অবচেতন অংশ) এবং আনকনশিয়াস (অচেতন অংশ) এর পারস্পরিক সঠিক ও সুষ্ঠু ভারসাম্য (Balance) বজায় রেখে সফলতার তরে প্রত্যয়ী এবং প্রয়াসী হওয়া মাত্র”।

ফেসবুকে আমন্ত্রণ রইলো:- Humayun Shariar Himu

সকলের জন্য শুভকামনা রইলো

The post জীবন নষ্ট হয়ে গিয়েছে? আসুন নতুন করে জীবনটাকে সাজিয়ে তুলি! appeared first on Trickbd.com.



from Trickbd.com https://ift.tt/xQmKDfC
إرسال تعليق (0)
أحدث أقدم